The Gospel of Sri Ramakrishna
EnglishBengaliHindi
Bengali
Bengali
  • শ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত
  • ১ উপক্রমণিকা
    • ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের সংক্ষিপ্ত চরিতামৃত
  • ২ দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - কালীবাড়ী ও উদ্যান
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - প্রথম দর্শন
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - দ্বিতীয় দর্শন
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - মাস্টারকে তিরস্কার ও তাঁহার অহঙ্কার চূর্ণকরণ
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - ভক্তির উপায়
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - তৃতীয় দর্শন
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - উপায় — বিশ্বাস
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - সমাধিমন্দিরে
    • নবম পরিচ্ছেদ - চতুর্থ দর্শন
    • দশম পরিচ্ছেদ - অন্তরঙ্গ সঙ্গে — ‘আমি কে’?
  • ৩ শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণের বলরাম-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে প্রেমানন্দে নৃত্য
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ শ্যামপুকুরে — প্রাণকৃষ্ণের বাটীতে
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - কমলকুটিরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও শ্রীযুক্ত কেশব সেন
  • ৪ কলিকাতায় শ্রীঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণের মিলন
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - বিদ্যাসাগরের বাটী
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - বিদ্যাসাগর
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ — জ্ঞানযোগ বা বেদান্ত বিচার
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - জ্ঞান ও বিজ্ঞান, অদ্বৈতবাদ, বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ ও দ্বৈতবাদ — এই তিনের সমন্বয়
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - ভক্তিযোগের রহস্য
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - ঈশ্বরকে ভালবাসা জীবনের উদ্দেশ্য
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর অহেতুক কৃপাসিন্ধু
  • ৫ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে নরেন্দ্রাদি অন্তরঙ্গ ও অন্যান্য ভক্তসঙ্গে
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে কেদারের উৎসব
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - কামিনী-কাঞ্চনই যোগের ব্যাঘাত — সাধনা ও যোগতত্ত্ব
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - গুরুশিষ্য-সংবাদ — গুহ্যকথা
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - পূর্বকথা — শ্রীরামকৃষ্ণের প্রথম প্রেমোন্মাদ কথা — ১৮৫৮
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - কীর্তনানন্দে নরেন্দ্র প্রভৃতি সঙ্গে — নরেন্দ্রকে প্রেমালিঙ্গন
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ ৺বিজয়াদিবসে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর অনন্ত ও অনন্ত ঈশ্বর — সকলই পন্থা — শ্রীবৃন্দাবন-দর্শন
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে বলরামাদি সঙ্গে — বলরামকে শিক্ষা
  • ৬ শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ ও কথোপকথন
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ — ‘সমাধিমন্দিরে’
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - সমাধিমন্দিরে — আত্মা অবিনশ্বর — পওহারী বাবা
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - জ্ঞানযোগ, ভক্তিযোগ ও কর্মযোগের সমন্বয়
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - বেদ ও তন্ত্রের সমন্বয় — আদ্যাশক্তির ঐশ্বর্য
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - এ সংসার কেন?
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - ব্রাহ্মদিগকে উপদেশ — খ্রীষ্টধর্ম, ব্রাহ্মসমাজ ও পাপবাদ
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - শ্রীযুক্ত কেশব সেনের সহিত নৌকাবিহার — সর্বভূতহিতে রতাঃ
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - কেশবকে শিক্ষা — গুরুগিরি ও ব্রাহ্মসমাজে — গুরু এক সচ্চিদানন্দ
    • নবম পরিচ্ছেদ - কেশবাদি ব্রাহ্মদিগকে কর্মযোগ সম্বন্ধে উপদেশ
    • দশম পরিচ্ছেদ - সুরেন্দ্রের বাড়ি নরেন্দ্র প্রভৃতি সঙ্গে
  • ৭ সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - উৎসবমন্দিরে শ্রীরামকৃষ্ণ
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - ভক্ত-সম্ভাষণে
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - তিন প্রকার আচার্য
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - ব্রহ্মের স্বরূপ মুখে বলা যায় না
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - ঈশ্বরদর্শন — সাকার না নিরাকার?
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - ঈশ্বরলাভের লক্ষণ — সপ্তভূমি ও ব্রহ্মজ্ঞান
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - ব্রাহ্মসমাজের প্রার্থনাপদ্ধতি ও ঈশ্বরের ঐশ্বর্য-বর্ণনা
  • ৮ সার্কাস রঙ্গালয়ে -- গৃহস্থের ও অন্যান্য কর্মীদের কঠিন সমস্যা ও শ্রীরামকৃষ্ণ
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে প্রাণকৃষ্ণ, মাস্টার প্রভৃতি সঙ্গে
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - ভাবরাজ্য ও রূপদর্শন
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের যশোদার ভাব ও সমাধি
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের শ্রীরাধার ভাব
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - অভ্যাসযোগ — দুই পথ — বিচার ও ভক্তি
  • ১১ বেলঘরে গ্রামে
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - বেলঘরে গ্রামে গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের বাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণের নরেন্দ্র প্রভৃতি ভক্তসঙ্গ
  • ১২ শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে রাখাল, রাম, নিত্যগোপাল, চৌধুরী প্রভৃতি ভক্ত
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - ঠাকুর দক্ষিণেশ্বরে অমাবস্যায় ভক্তসঙ্গে — রাখালের প্রতি গোপালভাব
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মোৎসব
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - জন্মোৎসবে ভক্তসঙ্গে — সন্ন্যাসীদের কঠিন নিয়ম
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - সাকার-নিরাকার — ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের রামনামে সমাধি
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - কীর্তনানন্দে ও সমাধিমন্দিরে
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - গোস্বামী সঙ্গে সর্বধর্ম-সমন্বয়প্রসঙ্গে
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, নিত্যসিদ্ধ ও কৌমার বৈরাগ্য
    • নবম পরিচ্ছেদ - পঞ্চবটীমূলে কীর্তনানন্দে
    • দশম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও গৃহস্থধর্ম
    • একাদশ পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বর-কালীবাড়িতে শ্রীযুক্ত অমৃত, শ্রীযুক্ত ত্রৈলোক্য প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তের স
    • দ্বাদশ পরিচ্ছেদ - গেরুয়াবসন ও সন্ন্যাসী — অভিনয়েও মিথ্যা ভাল নয়
    • ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ - নরেন্দ্র, রাখাল প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে বলরাম-মন্দিরে
    • চতুর্দশ পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে — মণিলাল ও কাশীদর্শন
    • পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ - গৃহস্থ ও কর্মযোগ
    • ষোড়শ পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও ব্রাহ্মগণ — প্রেমতত্ত্ব
    • সপ্তদশ পরিচ্ছেদ - শ্রীরামলাল প্রভৃতির গান ও শ্রীরামকৃষ্ণের সমাধি
    • অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণের ঈশ্বরাবেশ, তাঁহার মুখে ঈশ্বরের বাণী
    • ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ - অধরের প্রতি উপদেশ — সম্মুখে কাল
    • ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ - শ্রীশ্রীঅন্নপূর্ণাপূজা উপলক্ষে ভক্তসঙ্গে সুরেন্দ্রভবনে
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - ভক্তসঙ্গে সংকীর্তনানন্দে — সমাধিমন্দিরে
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও সাকার-নিরাকার
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ সিঁথির ব্রাহ্মসমাজে ব্রাহ্মভক্তসঙ্গে
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ ও আচার্য শ্রীবেচারাম — বেদান্ত ও ব্রহ্মতত্ত্ব প্রসঙ্গে
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - নন্দনবাগান ব্রাহ্মসমাজে রাখাল, মাস্টার প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ হরিকীর্তনানন্দে — হরিভক্তি-প্রদায়িনী সভায় ও রামচন্দ্রের বাটীতে শ্রীরাম
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ
    • নবম পরিচ্ছেদ - কলিকাতায় বলরাম ও অধরের বাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণ
    • দশম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলিকাতায় ভক্তমন্দিরে — শ্রীযুক্ত রামচন্দ্র দত্তের বাড়ি কীর্তনানন্দ
  • ১৪ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে ফলহারিণী — পূজাদিবসে ভক্তসঙ্গে
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - পূর্বকথা — শ্রীরামকৃষ্ণের প্রেমোন্মাদ ও রূপদর্শন
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - মণিলাল প্রভৃতি সঙ্গে — ঠাকুর “অহেতুক কৃপাসিন্ধু”
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - মণিলাল প্রভৃতি সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ ও নিরাকারবাদ
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের প্রথম প্রেমোন্মাদ কথা
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - হাজরার সঙ্গে কথা — গুরুশিষ্য-সংবাদ
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে — শ্রীযুক্ত রাখাল, রাম, কেদার, তারকমাস্টার
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে মণিরামপুর ও বেলঘরের ভক্তসঙ্গে
Powered by GitBook
On this page

Was this helpful?

  1. ৭ সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ

সপ্তম পরিচ্ছেদ - ব্রাহ্মসমাজের প্রার্থনাপদ্ধতি ও ঈশ্বরের ঐশ্বর্য-বর্ণনা

১৮৮২, ২৮শে অক্টোবর

অদৃষ্টপূর্বং হৃষিতোঽস্মি দৃষ্ট্বা, ভয়েন চ প্রব্যথিতং মনো মে ৷ তদেব মে দর্শয় দেব রূপং, প্রসীদ দেবেশ জগন্নিবাস ৷৷ [গীতা — ১১।৪৫]

ব্রাহ্মসমাজের প্রার্থনাপদ্ধতি ও ঈশ্বরের ঐশ্বর্য-বর্ণনা

[পূর্বকথা — দক্ষিণেশ্বরে রাধাকান্তের ঘরে গয়না চুরি — ১৮৬৯ ]

শ্রীরামকৃষ্ণ (শিবনাথের প্রতি) — হ্যাঁগা, তোমরা ঈশ্বরের ঐশ্বর্য অত বর্ণনা কর কেন? অমি কেশব সেনকে ওই কথা বলেছিলাম। একদিন তারা সব ওখানে (কালীবাড়িতে) গিছিল। আমি বললুম, তোমরা কিরকম লেকচার দাও, আমি শুনব। তা গঙ্গার ঘাটের চাঁদনিতে সভা হল, আর কেশব বলতে লাগল। বেশ বললে, আমার ভাব হয়ে গিছিল। পরে কেশবকে আমি বললুম, তুমি এগুলো এত বল কেন? — “হে ইশ্বর, তুমি কি সুন্দর ফুল করিয়াছ, তুমি আকাশ করিয়াছ, তুমি সমুদ্র করিয়াছ — এই সব?” যারা নিজে ঐশ্বর্য ভালবাসে তারা ঈশ্বরের ঐশ্বর্য বর্ণনা করতে ভালবাসে। যখন রাধাকান্তের গয়না চুরি গেল, সেজোবাবু (রাসমণির জামাই) রাধাকান্তের মন্দিরে গিয়ে ঠাকুরকে বলতে লাগল, “ছি ঠাকুর! তুমি তোমার গয়না রক্ষা করতে পারলে না!” আমি সেজোবাবুকে বললাম, “ও তোমার কি বুদ্ধি! স্বয়ং লক্ষ্মী যাঁর দাসী, পদসেবা করেন, তাঁর কি ঐশ্বর্যের অভাব! এ গয়না তোমার পক্ষেই ভারী একটা জিনিস, কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে কতকগুলো মাটির ড্যালা! ছি! অমন হীনবুদ্ধির কথা বলতে নাই; কি ঐশ্বর্য তুমি তাঁকে দিতে পার?” তাই বলি, যাঁকে নিয়ে আনন্দ হয়, তাঁকেই লোকে চায়; তার বাড়ি কোথায়, ক’খানা বাড়ি, ক’টা বাগান, কত ধন-জন, দাস-দাসী এ খবরে কাজ কি? নরেন্দ্রকে যখন দেখি, তখন আমি সব ভুলে যাই। তার কোথা বাড়ি, তার বাবা কি করে, তার ক’টি ভাই এ-সব কথা একদিন ভুলেও জিজ্ঞাসা করি নাই। ঈশ্বরের মাধুর্যরসে ডুবে যাও! তাঁর অনন্ত সৃষ্টি, অনন্ত ঐশ্বর্য! অত খবরে আমাদের কাজ কি।

আবার সেই গন্ধর্বনিন্দিতকণ্ঠে সেই মধুরিমাপূর্ণ গান:

“ডুব্‌ ডুব্‌ ডুব্‌ রূপসাগরে আমার মন ৷ তলাতল পাতাল খুঁজলে পাবি রে প্রেম রত্নধন ৷৷ খুঁজ্‌ খুঁজ্‌ খুঁজ্‌ খুঁজলে পাবি হৃদয়মাঝে বৃন্দাবন ৷ দীপ্‌ দীপ্‌ দীপ্‌ জ্ঞানের বাতি, জ্বলবে হৃদে অনুক্ষণ ৷৷ ড্যাং ড্যাং ড্যাং ডাঙায় ডিঙে, চালায় আবার সে কোন্‌ জন ৷ ****কুবীর বলে শোন্‌ শোন্‌ শোন্‌ ভাব গুরুর শ্রীচরণ ৷৷

“তবে দর্শনের পর ভক্তের সাধ হয় তাঁর লীলা কি, দেখি। রামচন্দ্র রাবণবধের পর রাক্ষসপুরী প্রবেশ করলেন; বুড়ী নিকষা দৌড়ে পালাতে লাগল। লক্ষ্মণ বললেন, ‘রাম! একি বলুন দেখি, এই নিকষা এত বুড়ী, কত পুত্রশোক পেয়েছে, তার এত প্রাণের ভয়, পালাচ্ছে!’ রামচন্দ্র নিকষাকে অভয় দান করে সম্মুখে আনিয়ে জিজ্ঞাসা করাতে নিকষা বললে, ‘রাম, এতদিন বেঁচে আছি বলে তোমার এত লীলা দেখলাম, তাই আরও বাঁচবার সাধ আছে। তোমার আরো কত লীলা দেখব।’ (সকলের হাস্য)

(শিবনাথের প্রতি) — “তোমাকে দেখতে ইচ্ছা করে। শুদ্ধাত্মাদের না দেখলে কি নিয়ে থাকব? শুদ্ধাত্মাদের পূর্বজন্মের বন্ধু বলে বোধ হয়।”

একজন ব্রাহ্মভক্ত জিজ্ঞাসা করলেন, মহাশয়! আপনি জন্মান্তর মানেন?

[জন্মান্তর — “বহুনি মে ব্যতীতানি জন্মানি তব চার্জুন” ]

শ্রীরামকৃষ্ণ — হ্যাঁ, আমি শুনেছি জন্মান্তর আছে। ঈশ্বরের কার্য আমরা ক্ষুদ্রবুদ্ধিতে কি বুঝব? অনেকে বলে গেছে, তাই অবিশ্বাস করতে পারি না। ভীষ্মদেব দেহত্যাগ করবেন, শরশয্যায় শুয়ে আছেন, পাণ্ডবেরা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে সব দাঁড়িয়ে। তাঁরা দেখলেন যে, ভীষ্মদেবের চক্ষু দিয়ে জল পড়ছে। অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে বললেন, ‘ভাই, কি অশ্চর্য! পিতামহ, যিনি স্বয়ং ভীষ্মদেব, সত্যবাদী, জিতেন্দ্রিয়, জ্ঞানী, অষ্টবসুর এক বসু, তিনিও দেহত্যাগের সময় মায়াতে কাঁদছেন।’ শ্রীকৃষ্ণ ভীষ্মদেবকে এ-কথা বলাতে তিনি বললেন, ‘কৃষ্ণ, তুমি বেশ জানো, আমি সেজন্য কাঁদছি না! যখন ভাবছি যে, যে পাণ্ডবদের স্বয়ং ভগবান নিজে সারথি, তাদেরও দুঃখ-বিপদের শেষ নাই, তখন এই মনে করে কাঁদছি যে, ভগবানের কার্য কিছুই বুঝতে পারলাম না।’

[কীর্তনানন্দে — ভক্তসঙ্গে ]

সমাজগৃহে এইবার সন্ধ্যাকালীন উপাসনা হইল। রাত্রি প্রায় সাড়ে আটটা। সন্ধ্যার চার-পাঁচ দণ্ডের পর রাত্রী জ্যোৎস্নাময়ী হইল। উদ্যানের বৃক্ষরাজি লতাপল্লব শরচ্চন্দ্রের বিমলকিরণে যেন ভাসিতে লাগিল। এদিকে সমাজগৃহে সংকীর্তন আরম্ভ হইয়াছে। ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ হরিপ্রেমে মাতোয়ারা হইয়া নাচিতেছেন, ব্রাহ্মভক্তেরা খোল-করতাল লইয়া তাঁহাকে বেড়িয়া বেড়িয়া নাচিতেছেন। সকলেই ভাবে মত্ত, যেন শ্রীভগবানের সাক্ষাৎকার লাভ করিয়াছেন! হরিনামের রোল উত্তরোত্তর উঠিতেছে। চারিদিকে গ্রামবাসীরা হরিনাম শুনিতেছেন, আর মনে মনে উদ্যানস্বামী ভক্ত বেণীমাধবকে কতই ধন্যবাদ দিতেছেন।

কীর্তনান্তে শ্রীরামকৃষ্ণ ভূমিষ্ঠ হইয়া জগন্মাতাকে প্রণাম করিতেছেন। প্রণাম করিতে করিতে বলিতেছেন, “ভাগবত-ভক্ত-ভগবান, জ্ঞানীর চরণে প্রণাম, ভক্তের চরণে প্রণাম, সাকারবাদী ভক্তের চরণে, নিরাকারবাদী ভক্তের চরণে প্রণাম; আগেকার ব্রহ্মজ্ঞানীদের চরণে, ব্রাহ্মসমাজের ইদানীং ব্রহ্মজ্ঞানীদের চরণে প্রণাম।”

বেণীমাধব নানাবিধ উপায়ের খাদ্য আয়োজন করিয়াছিলেন ও সমবেত সকল ভক্তকে পরিতোষ করিয়া খাওয়াইলেন। শ্রীরামকৃষ্ণও ভক্তসঙ্গে বসিয়া আনন্দ করিতে করিতে প্রসাদ গ্রহণ করিলেন।

Previousষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - ঈশ্বরলাভের লক্ষণ — সপ্তভূমি ও ব্রহ্মজ্ঞানNextপ্রথম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে প্রাণকৃষ্ণ, মাস্টার প্রভৃতি সঙ্গে

Last updated 5 years ago

Was this helpful?