The Gospel of Sri Ramakrishna
EnglishBengaliHindi
Bengali
Bengali
  • শ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত
  • ১ উপক্রমণিকা
    • ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের সংক্ষিপ্ত চরিতামৃত
  • ২ দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - কালীবাড়ী ও উদ্যান
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - প্রথম দর্শন
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - দ্বিতীয় দর্শন
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - মাস্টারকে তিরস্কার ও তাঁহার অহঙ্কার চূর্ণকরণ
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - ভক্তির উপায়
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - তৃতীয় দর্শন
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - উপায় — বিশ্বাস
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - সমাধিমন্দিরে
    • নবম পরিচ্ছেদ - চতুর্থ দর্শন
    • দশম পরিচ্ছেদ - অন্তরঙ্গ সঙ্গে — ‘আমি কে’?
  • ৩ শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণের বলরাম-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে প্রেমানন্দে নৃত্য
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ শ্যামপুকুরে — প্রাণকৃষ্ণের বাটীতে
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - কমলকুটিরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও শ্রীযুক্ত কেশব সেন
  • ৪ কলিকাতায় শ্রীঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণের মিলন
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - বিদ্যাসাগরের বাটী
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - বিদ্যাসাগর
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ — জ্ঞানযোগ বা বেদান্ত বিচার
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - জ্ঞান ও বিজ্ঞান, অদ্বৈতবাদ, বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ ও দ্বৈতবাদ — এই তিনের সমন্বয়
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - ভক্তিযোগের রহস্য
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - ঈশ্বরকে ভালবাসা জীবনের উদ্দেশ্য
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর অহেতুক কৃপাসিন্ধু
  • ৫ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে নরেন্দ্রাদি অন্তরঙ্গ ও অন্যান্য ভক্তসঙ্গে
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে কেদারের উৎসব
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - কামিনী-কাঞ্চনই যোগের ব্যাঘাত — সাধনা ও যোগতত্ত্ব
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - গুরুশিষ্য-সংবাদ — গুহ্যকথা
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - পূর্বকথা — শ্রীরামকৃষ্ণের প্রথম প্রেমোন্মাদ কথা — ১৮৫৮
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - কীর্তনানন্দে নরেন্দ্র প্রভৃতি সঙ্গে — নরেন্দ্রকে প্রেমালিঙ্গন
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ ৺বিজয়াদিবসে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর অনন্ত ও অনন্ত ঈশ্বর — সকলই পন্থা — শ্রীবৃন্দাবন-দর্শন
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে বলরামাদি সঙ্গে — বলরামকে শিক্ষা
  • ৬ শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ ও কথোপকথন
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ — ‘সমাধিমন্দিরে’
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - সমাধিমন্দিরে — আত্মা অবিনশ্বর — পওহারী বাবা
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - জ্ঞানযোগ, ভক্তিযোগ ও কর্মযোগের সমন্বয়
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - বেদ ও তন্ত্রের সমন্বয় — আদ্যাশক্তির ঐশ্বর্য
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - এ সংসার কেন?
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - ব্রাহ্মদিগকে উপদেশ — খ্রীষ্টধর্ম, ব্রাহ্মসমাজ ও পাপবাদ
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - শ্রীযুক্ত কেশব সেনের সহিত নৌকাবিহার — সর্বভূতহিতে রতাঃ
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - কেশবকে শিক্ষা — গুরুগিরি ও ব্রাহ্মসমাজে — গুরু এক সচ্চিদানন্দ
    • নবম পরিচ্ছেদ - কেশবাদি ব্রাহ্মদিগকে কর্মযোগ সম্বন্ধে উপদেশ
    • দশম পরিচ্ছেদ - সুরেন্দ্রের বাড়ি নরেন্দ্র প্রভৃতি সঙ্গে
  • ৭ সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - উৎসবমন্দিরে শ্রীরামকৃষ্ণ
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - ভক্ত-সম্ভাষণে
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - তিন প্রকার আচার্য
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - ব্রহ্মের স্বরূপ মুখে বলা যায় না
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - ঈশ্বরদর্শন — সাকার না নিরাকার?
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - ঈশ্বরলাভের লক্ষণ — সপ্তভূমি ও ব্রহ্মজ্ঞান
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - ব্রাহ্মসমাজের প্রার্থনাপদ্ধতি ও ঈশ্বরের ঐশ্বর্য-বর্ণনা
  • ৮ সার্কাস রঙ্গালয়ে -- গৃহস্থের ও অন্যান্য কর্মীদের কঠিন সমস্যা ও শ্রীরামকৃষ্ণ
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে প্রাণকৃষ্ণ, মাস্টার প্রভৃতি সঙ্গে
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - ভাবরাজ্য ও রূপদর্শন
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের যশোদার ভাব ও সমাধি
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের শ্রীরাধার ভাব
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - অভ্যাসযোগ — দুই পথ — বিচার ও ভক্তি
  • ১১ বেলঘরে গ্রামে
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - বেলঘরে গ্রামে গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের বাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণের নরেন্দ্র প্রভৃতি ভক্তসঙ্গ
  • ১২ শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে রাখাল, রাম, নিত্যগোপাল, চৌধুরী প্রভৃতি ভক্ত
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - ঠাকুর দক্ষিণেশ্বরে অমাবস্যায় ভক্তসঙ্গে — রাখালের প্রতি গোপালভাব
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মোৎসব
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - জন্মোৎসবে ভক্তসঙ্গে — সন্ন্যাসীদের কঠিন নিয়ম
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - সাকার-নিরাকার — ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের রামনামে সমাধি
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - কীর্তনানন্দে ও সমাধিমন্দিরে
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - গোস্বামী সঙ্গে সর্বধর্ম-সমন্বয়প্রসঙ্গে
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, নিত্যসিদ্ধ ও কৌমার বৈরাগ্য
    • নবম পরিচ্ছেদ - পঞ্চবটীমূলে কীর্তনানন্দে
    • দশম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও গৃহস্থধর্ম
    • একাদশ পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বর-কালীবাড়িতে শ্রীযুক্ত অমৃত, শ্রীযুক্ত ত্রৈলোক্য প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তের স
    • দ্বাদশ পরিচ্ছেদ - গেরুয়াবসন ও সন্ন্যাসী — অভিনয়েও মিথ্যা ভাল নয়
    • ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ - নরেন্দ্র, রাখাল প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে বলরাম-মন্দিরে
    • চতুর্দশ পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে — মণিলাল ও কাশীদর্শন
    • পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ - গৃহস্থ ও কর্মযোগ
    • ষোড়শ পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও ব্রাহ্মগণ — প্রেমতত্ত্ব
    • সপ্তদশ পরিচ্ছেদ - শ্রীরামলাল প্রভৃতির গান ও শ্রীরামকৃষ্ণের সমাধি
    • অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণের ঈশ্বরাবেশ, তাঁহার মুখে ঈশ্বরের বাণী
    • ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ - অধরের প্রতি উপদেশ — সম্মুখে কাল
    • ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ - শ্রীশ্রীঅন্নপূর্ণাপূজা উপলক্ষে ভক্তসঙ্গে সুরেন্দ্রভবনে
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - ভক্তসঙ্গে সংকীর্তনানন্দে — সমাধিমন্দিরে
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও সাকার-নিরাকার
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ সিঁথির ব্রাহ্মসমাজে ব্রাহ্মভক্তসঙ্গে
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ ও আচার্য শ্রীবেচারাম — বেদান্ত ও ব্রহ্মতত্ত্ব প্রসঙ্গে
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - নন্দনবাগান ব্রাহ্মসমাজে রাখাল, মাস্টার প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ হরিকীর্তনানন্দে — হরিভক্তি-প্রদায়িনী সভায় ও রামচন্দ্রের বাটীতে শ্রীরাম
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ
    • নবম পরিচ্ছেদ - কলিকাতায় বলরাম ও অধরের বাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণ
    • দশম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলিকাতায় ভক্তমন্দিরে — শ্রীযুক্ত রামচন্দ্র দত্তের বাড়ি কীর্তনানন্দ
  • ১৪ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িমধ্যে
    • প্রথম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে ফলহারিণী — পূজাদিবসে ভক্তসঙ্গে
    • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ - পূর্বকথা — শ্রীরামকৃষ্ণের প্রেমোন্মাদ ও রূপদর্শন
    • তৃতীয় পরিচ্ছেদ - মণিলাল প্রভৃতি সঙ্গে — ঠাকুর “অহেতুক কৃপাসিন্ধু”
    • চতুর্থ পরিচ্ছেদ - মণিলাল প্রভৃতি সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ ও নিরাকারবাদ
    • পঞ্চম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের প্রথম প্রেমোন্মাদ কথা
    • ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - হাজরার সঙ্গে কথা — গুরুশিষ্য-সংবাদ
    • সপ্তম পরিচ্ছেদ - ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে — শ্রীযুক্ত রাখাল, রাম, কেদার, তারকমাস্টার
    • অষ্টম পরিচ্ছেদ - দক্ষিণেশ্বরে মণিরামপুর ও বেলঘরের ভক্তসঙ্গে
Powered by GitBook
On this page

Was this helpful?

  1. ১২ শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ও বলরাম-মন্দিরে

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ - নন্দনবাগান ব্রাহ্মসমাজে রাখাল, মাস্টার প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে

১৮৮৩, ২রা মে

নন্দনবাগান ব্রাহ্মসমাজে রাখাল, মাস্টার প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে

[শ্রীমন্দিরদর্শন ও উদ্দীপন — শ্রীরাধার প্রেমোন্মাদ ]

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ নন্দনবাগান ব্রাহ্মসমাজ-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে বসিয়া আছেন। ব্রাহ্মভক্তদের সহিত কথা কহিতেছেন। সঙ্গে রাখাল, মাস্টার প্রভৃতি আছেন। বেলা পাঁচটা হইবে।

৺কাশীশ্বর মিত্রের বাগান বড়ি নন্দনবাগানে। তিনি পূর্বে সদরওয়ালা ছিলেন। আদি ব্রাহ্মসমাজভুক্ত ব্রহ্মজ্ঞানী। তিনি নিজের বাড়িতেই দ্বিতলায় বৃহৎ প্রকোষ্ঠমধ্যে ঈশ্বরের উপাসনা করিতেন, আর ভক্তদের নিমন্ত্রণ করিয়া মাঝে মাঝে উৎসব করিতেন। তাঁহার স্বর্গরোহণের পর শ্রীনাথ, যজ্ঞনাথ প্রভৃতি তাঁহার পুত্রগণ কিছুদিন ওইরূপ উৎসব করিয়াছিলেন। তাঁহারাই ঠাকুরকে অতি যত্ন করিয়া নিমন্ত্রণ করিয়া আনিয়াছেন।

ঠাকুর প্রথমে আসিয়া নিচে একটি বৈঠকখানাঘরে আসন গ্রহণ করিয়াছিলেন। সে ঘরে ব্রাহ্মভক্তগণ ক্রমে ক্রমে আসিয়া একত্রিত হইয়াছিলেন। শ্রীযুক্ত রবীন্দ্র (ঠাকুর) প্রভৃতি ঠাকুরবংশের ভক্তগণ এই উৎসবক্ষেত্রে উপস্থিত ছিলেন।

আহূত হইয়া ঠাকুর ভক্তসঙ্গে দ্বিতলায় উপাসনামন্দিরে গিয়া উপবেশন করিলেন। উপাসনার গৃহের পূর্বধারে বেদী রচনা হইয়াছে। দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে একটি ইংরেজী বাদ্যযন্ত্র (Piano) রহিয়াছে। ঘরের উত্তরাংশে কয়েকখানি চেয়ার পাতা আছে। তাহারই পূর্বধারে দ্বার আছে — অন্তঃপুরে যাওয়া যায়।

সন্ধ্যার সময় উৎসবের উপাসনা আরম্ভ হইবে। আদি ব্রাহ্মসমাজের শ্রীযুক্ত ভৈরব বন্দ্যোপাধ্যায় দু-একটি ভক্তসঙ্গে বেদীতে বসিয়া উপাসনাকার্য সম্পন্ন করিবেন।

গ্রীষ্মকাল — আজ বুধবার (২০শে বৈশাখ), চৈত্র কৃষ্ণা দশমী তিথি। ২রা মে, ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দ। ব্রাহ্মভক্তেরা অনেকে নিচের বৃহৎ প্রাঙ্গণে বা বারান্দায় বেড়াইতেছেন। শ্রীযুক্ত জানকী ঘোষাল প্রভৃতি কেহ কেহ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে উপাসনাগৃহে আসিয়া আসন গ্রহণ করিয়াছেন। তাঁহার মুখে ঈশ্বরীয় কথা শুনিবেন। ঘরে প্রবেশ করিবামাত্র বেদীর সম্মুখে ঠাকুর প্রণাম করিলেন। আসন গ্রহণ করিয়া রাখাল, মাস্টার প্রভৃতিকে কহিতেছেন —

নরেন্দ্র আমায় বলেছিল, ‘সমাজমন্দির প্রণাম করে কি হয়?’

“মন্দির দেখলে তাঁকেই মনে পড়ে — উদ্দীপন হয়। যেখানে তাঁর কথা হয় সেইখানে তাঁর আবির্ভাব হয়, — আর সকল তীর্থ উপস্থিত হয়। এ-সব জায়গা দেখলে ভগবানকেই মনে পড়ে।

“একজন ভক্ত বাবলাগাছ দেখে ভাবাবিষ্ট হয়েছিল! — এই মনে করে যে, এই কাঠে ঠাকুর রাধাকান্তের বাগানের জন্য কুড়ুলের বাঁট হয়।

“একজন ভক্তের এরূপ গুরুভক্তি যে, গুরুর পাড়ার লোককে দেখে ভাবে বিভোর হয়ে গেল!

“মেঘ দেখে — নীলবসন দেখে — চিত্রপট দেখে — শ্রীমতীর কৃষ্ণের উদ্দীপন হত। তিনি এই সব দেখে উন্মত্তের ন্যায় ‘কোথায় কৃষ্ণ!’ বলে ব্যাকুল হতেন।”

ঘোষাল — উন্মাদ তো ভাল নয়।

শ্রীরামকৃষ্ণ — সে কি গো? একি বিষয়চিন্তা করে উন্মাদ, যে অচৈতন্য হবে? এ অবস্থা যে ভগবানচিন্তা করে হয়! প্রেমোন্মাদ, জ্ঞানোন্মাদ — কি শুন নাই?

[উপায় — ঈশ্বরকে ভালবাসা ও ছয় রিপুকে মোড় ফিরানো ]

একজন ব্রাহ্মভক্ত — কি উপায়ে তাঁকে পাওয়া যায়?

শ্রীরামকৃষ্ণ — তাঁর উপর ভালবাসা। — আর এই সদাসর্বদা বিচার — ঈশ্বরই সত্য, জগৎ অনিত্য।

“অশ্বত্থই সত্য — ফল দুদিনের জন্য।”

ব্রাহ্মভক্ত — কাম, ক্রোধ, রিপু রয়েছে, কি করা যায়?

শ্রীরামকৃষ্ণ — ছয় রিপুকে ঈশ্বরের দিকে মোড় ফিরিয়ে দাও।

“আত্মার সহিত রমণ করা, এই কামনা।

“যারা ঈশ্বরের পথে বাধা দেয় তাদের উপর ক্রোধ। তাঁকে পাবার লোভ। ‘আমার আমার’ যদি করতে হয়, তবে তাঁক লয়ে। যেমন — আমার কৃষ্ণ, আমার রাম। যদি অহংকার করতে হয় তো বিভীষণের মতো! — আমি রামকে প্রণাম করেছি — এ-মাথা আর কারু কাছে অবনত করব না।”

ব্রাহ্মভক্ত — তিনিই যদি সব করাচ্ছেন, তাহলে আমি পাপের জন্য দায়ী নই?

[Free Will, Responsibility (পাপের দায়িত্ব) ]

শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) — দুর্যোধন ওই কথা বলেছিল,

“ত্বয়া হৃষিকেশ হৃদিস্থিতেন, যথা নিযুক্তোঽস্মি তথা করোমি।

“যার ঠিক বিশ্বাস — ‘ঈশ্বরই কর্তা আর আমি অকর্তা’ — তার পাপ কার্য হয় না। যে নাচতে ঠিক শিখেছে তার বেতালে পা পড়ে না।

“অন্তর শুদ্ধ না হলে ঈশ্বর আছেন বলে বিশ্বাসই হয় না!”

ঠাকুর উপাসনাগৃহে সমবেত লোকগুলিকে দেখিতেছেন ও বলিতেছেন — “মাঝে মাঝে এরূপ একসঙ্গে ঈশ্বরচিন্তা ও তাঁর নামগুণকীর্তন করা খুব ভাল।

“তবে সংসারী লোকদের ঈশ্বরে অনুরাগ ক্ষণিক — যেমন তপ্ত লৌহে জলের ছিটে দিলে, জল তাতে যতক্ষণ থাকে!”

[ব্রাহ্মোপাসনা ও শ্রীরামকৃষ্ণ ]

এইবার উপাসনা আরম্ভ হবে। উপাসনার বৃহৎ প্রকোষ্ঠ ব্রাহ্মভক্তে পরিপূর্ণ হইল। কয়েকটি ব্রাহ্মিকা ঘরের উত্তরদিকে চেয়ারে আসিয়া বসিলেন — হাতে সঙ্গীতপুস্তক।

পিয়ানো ও হারমোনিয়াম সংযোগে ব্রহ্মসঙ্গীত গীত হইতে জাগিল। সঙ্গীত শুনিয়া ঠাকুরের আনন্দের সীমা রহিল না। ক্রমে উদ্বোধন — প্রার্থনা — উপাসনা। বেদীতে উপবিষ্ট আচার্যগণ বেদ হইতে মন্ত্রপাঠ করিতে লাগিলেন:

‘ওঁ পিতা নোঽসি পিতা নোবোধি। নমস্তেস্তু মা মা হিংসীঃ।

‘তুমি আমাদের পিতা, আমাদের সদ্বুদ্ধি দাও — তোমাকে নমস্কার। আমাদিগকে বিনাশ করিও না।’

ব্রাহ্মভক্তেরা সমস্বরে আচার্যের সহিত বলিতেছেন:

ওঁ সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্রহ্ম। আনন্দরূপমমৃতংযদ্বিভাতি। শান্তং শিবমদ্বৈতম্‌ শুদ্ধমপাপবিদ্ধম্‌।

এইবার আচার্যগণ স্তব করিতেছেন:

ওঁ নমস্তে সতে তে জগৎকারণায় নমস্তে চিতে সর্বলোকাশ্রয়ায়। ইত্যাদি।

স্তোত্রপাঠের পর আচার্যেরা প্রার্থনা করিতেছেন:

অসতো মা সদ্‌গময়। তমসো মা জ্যোতির্গময়। মৃত্যোর্মাঽমৃতং গময়। ...আবিরাবীর্ম এধি। ...রুদ্র যত্তে দক্ষিণং মুখং তেন মাং পাহি নিত্যম্‌।

স্ত্রোত্রাদি পাঠ শুনিয়া ঠাকুর ভাবাবিষ্ট হইতেছেন। এইবার আচার্য প্রবন্ধ পাঠ করিতেছেন।

[অক্রোধ পরমানন্দ শ্রীরামকৃষ্ণ — অহেতুক কৃপাসিন্ধু ]

উপাসনা হইয়া গেল। ভক্তদের লুচি, মিষ্টান্ন আদি খাওয়াইবার উদ্যোগ হইতেছে। ব্রাহ্মভক্তেরা অধিকাংশই নিচের প্রাঙ্গণে ও বারান্দায় বায়ুসেবন করিতেছেন।

রাত নয়টা হইল। ঠাকুরের দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ফিরিয়া যাইতে হইবে। গৃহস্বামীরা আহূত সংসারীভক্তদের লইয়া খাতির করিতে করিতে এত ব্যতিব্যস্ত হইয়াছেন যে, ঠাকুরের আর কোন সংবাদ লইতে পারিতেছেন না।

শ্রীরামকৃষ্ণ (রাখাল প্রভৃতির প্রতি) — কিরে কেউ ডাকে না যে রে!

রাখাল (সক্রোধে) — মহাশয়, চলে আসুন — দক্ষিণেশ্বরে যাই।

শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্য) — আরে রোস্‌ — গাড়িভাড়া তিন টাকা দুআনা কে দেবে! — রোখ করলেই হয় না। পয়সা নাই আবার ফাঁকা রোখ! আর এত রাত্রে খাই কোথা!

অনেকক্ষণ পরে শোনা গেল, পাতা হইয়াছে। সব ভক্তদের এককালে আহ্বান করা হইল। সেই ভিড়ে ঠাকুর রাখাল প্রভৃতির সঙ্গে দ্বিতলায় জলযোগ করিতে চলিলেন। ভিড়েতে বসিবার জায়গা পাওয়া যাইতেছে না। অনেক কষ্টে ঠাকুরকে একধারে বসানো হইল।

স্থানটি অপরিষ্কার। একজন রন্ধনী-ব্রাহ্মণী তরকারি পরিবেশন করিল — ঠাকুরের তরকারি খাইতে প্রবৃত্তি হইল না। তিনি নুন টাক্‌না দিয়া লুচি খাইলেন ও কিঞ্চিৎ মিষ্টান্ন গ্রহণ করিলেন।

ঠাকুর দয়াসিন্ধু। গৃহস্বামীদের ছোকরা বয়স। তাহারা তাঁহার পূজা করিতে জানে না বলিয়া তিনি কেন বিরক্ত হইবেন? তিনি না খাইয়া চলিয়া গেলে যে, তাহাদের অমঙ্গল হইবে। আর তাহারা ঈশ্বরকে উদ্দেশ করিয়াই এই সমস্ত আয়োজন করিয়াছে।

আহারান্তে ঠাকুর গাড়িতে উঠিলেন। গাড়িভাড়া কে দিবে? গৃহস্বামীদের দেখতেই পাওয়া যাচ্ছে না। ঠাকুর গাড়িভাড়া সম্বন্ধে ভক্তদের কাছে আনন্দ করিতে করিতে গল্প করিয়াছিলেন —

“গাড়িভাড়া চাইতে গেল। তা প্রথমে হাঁকিয়া দিলে! — তারপর অনেক কষ্টে তিন টাকা পাওয়া গেল, দুআনা আর দিলে না! বলে, ওইতেই হবে।”

Previousপঞ্চম পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ ও আচার্য শ্রীবেচারাম — বেদান্ত ও ব্রহ্মতত্ত্ব প্রসঙ্গেNextসপ্তম পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ হরিকীর্তনানন্দে — হরিভক্তি-প্রদায়িনী সভায় ও রামচন্দ্রের বাটীতে শ্রীরাম

Last updated 4 years ago

Was this helpful?