সপ্তম পরিচ্ছেদ - শ্রীরামকৃষ্ণ হরিকীর্তনানন্দে — হরিভক্তি-প্রদায়িনী সভায় ও রামচন্দ্রের বাটীতে শ্রীরাম
১৮৮৩, ১৩ই মে
শ্রীরামকৃষ্ণ হরিকীর্তনানন্দে — হরিভক্তি-প্রদায়িনী সভায় ও রামচন্দ্রের বাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণ
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ কলিকাতায় কাঁসারীপাড়া হরিভক্তি-প্রদায়িনী সভায় শুভাগমন করিয়াছেন; রবিবার (৩১শে) বৈশাখ, শুক্লা সপ্তমী, ১৩ই মে, ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দ। আজ সভার বার্ষিক উৎসব হইতেছে। মনোহরসাঁই-এর কীর্তন হইতেছে।
‘মান’ এই পালা গান হইতেছে। সখীরা শ্রীমতীকে বলছেন, “মান কেন করলি, তবে তুই বুঝি কৃষ্ণের সুখ চাস না।” শ্রীমতী বলছেন, “চন্দ্রাবলীর কুঞ্জে, যাবার জন্য নয়। সেখানে যাওয়া কেন? সে যে সেবা জানে না!”
পরের রবিবার (২০-৫-৮৩) রামচন্দ্রের বাটীতে আবার কীর্তন হইতেছে, মাথুর গান। ঠাকুর আসিয়াছেন। বৈশাখ, শুক্লা চতুর্দশী; ৭ই জ্যৈষ্ঠ। মাথুর গান হইতেছে, শ্রীমতী কৃষ্ণের বিরহে অনেক কথা বলিতেছেন, ”বালিকা অবস্থা থেকেই শ্যামকে দেখতে ভালবাসতাম। সখি, নখের ছনদ দিন গুণিতে ক্ষয় হয়ে গেছে। দেখ, তিনি যে মালা দিয়েছেন, সে মালা শুকায়ে গিয়েছে, তবু ফেলি নাই। কৃষ্ণচন্দ্রের উদয় কোথা হল? সে চন্দ্র, মান রাহুর ভয়ে বুঝি চলে গেল! হায়, সেই কৃষ্ণ মেঘকে আবার কবে দর্শন হবে; আর কি দেখা হবে! বঁধু, প্রাণ ভরে তোমায় কখনও দেখিতে পাই নাই; একে দুটি চোখ তাতে নিমিখ্, তাতে বারিধারা। তাঁর শিরে ময়ূর পাখা যেন স্থির বিজলী। ময়ূরগণ সেই মেঘ দেখে পাখা তুলে নৃত্য করত।
“সখি, এ প্রাণ তো থাকিবে না — রেখো দেহ তমালের ডালে, আর আবার গায়ে কৃষ্ণনাম লিখে দিও!”
শ্রীরামকৃষ্ণ বলিতেছেন, “তিনি আর তাঁর নাম অভেদ; তাই শ্রীমতী এইরূপ বলছেন। যেই রাম সেই নাম।” ঠাকুর ভাবাবিষ্ট হইয়া এই মাথুর কীর্তন গান শুনিতেছেন। গোস্বামী কীর্তনিয়া এই সকল গান গাইতেছেন। আগামী রবিবারে আবার দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ওই গান হইবে। তাহার পরের শনিবারে আবার অধরের বাড়িতে ওই কীর্তন হইবে।
Last updated
Was this helpful?